মো. শিফাত মাহমুদ ফাহিম, বিশেষ প্রতিনিধি:নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায় সাংবাদিক পরিচয়ে এখনো বিভিন্ন সরকারি অফিস-আদালতে দাপট দেখাচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন ধরে তারা দলীয় পদ-পদবীর আড়ালে নানা অনিয়ম ও অপকর্মে জড়িত থাকলেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্বৈরাচারী শাসন, আর সাংবাদিকতার মুখোশ
স্থানীয়দের অভিযোগ, শেখ হাসিনার সরকারের সময় এরা সাংবাদিকতার পরিচয় ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার করে আসছিল। গত ৫ আগস্ট হাসিনা দেশত্যাগের পর সাময়িক আত্মগোপনে গেলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পুরনো অভ্যাসমতো এখনো সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে নিজেদের প্রভাব খাটাচ্ছে তারা।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
স্থানীয়ভাবে “সাংবাদিক নামধারী আওয়ামী দালাল” হিসেবে পরিচিত এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তালিকাভুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:
মো. ওমর ফারুক – “দৈনিক যায়যায়দিন” পত্রিকার প্রতিনিধি এবং ৮ নম্বর হাটকালুপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
মজিদ মল্লিক – “দৈনিক ভোরের চেতনা” প্রতিনিধি এবং ১ নম্বর শাহাগোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
মো. আবু হেনা – “দৈনিক ঢাকা প্রতিদিন” এর প্রতিনিধি, আত্রাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে মাদক সেবন, ব্যবসা ও একাধিক মামলার অভিযোগ রয়েছে।
মো. রুহুল আমিন – “দৈনিক দেশচিত্র” এর প্রতিনিধি ও আত্রাই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক; স্থানীয়ভাবে তাকে একজন প্রভাবশালী আওয়ামী দালাল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
তপন সরকার – “দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ” এর নাম ব্যবহারকারী ও একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক; তিনিও একইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারে যুক্ত বলে অভিযোগ।
আব্দুর রহমান রিজভী – “প্রজন্মের আলো” নামক একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদকের পরিচয়ে পরিচিত। তিনি বান্দাইখাড়া টেকনিক্যাল বিএম অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। অভিযোগ রয়েছে, তার প্রতিষ্ঠানে একাধিক ভুয়া শিক্ষক থাকলেও, এমপিদের ঘনিষ্ঠতার কারণে প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানটি ‘সেরা’ ঘোষিত হয়।
“স্কুল ফাঁকি দিয়ে সাংবাদিকতা”
স্থানীয়রা জানান, এই তথাকথিত সাংবাদিকরা দিনের বেলায় স্কুল ফাঁকি দিয়ে সাংবাদিকতার নামে ঘুরে বেড়ান এবং মাস শেষে পূর্ণ বেতন-ভাতা তোলেন। কেউ কেউ শিক্ষকের পদে থেকেও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দালালিতে ব্যস্ত।
জনগণের দাবি: প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি
এলাকাবাসী মনে করছেন, সাংবাদিকতার নামে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার এবং সরকারি পদে থেকে দায়িত্ব পালনে গাফিলতির ঘটনাগুলো প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হওয়া প্রয়োজন। এদের অপতৎপরতা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
Leave a Reply