হেলাল উদ্দিন টেকনাফ
টেকনাফ শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তরে সমুদ্র উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়ন।ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল। স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ-ছয় ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে বড় বড় ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ছে। এরমধ্যে আজ বুধবার দুপুরে ইউনিয়নের উত্তর শিলখালী সৈকতে আনা হয় দুই দিন বয়সী ৩৫০টি সামুদ্রিক ‘অলিভ রিডেল’ প্রজাতির কচ্ছপের বাচ্চা। এরপর এক পা দুই পা করে কচ্ছপের বাচ্চাগুলোকে উত্তাল সাগরের পানিতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঢেউয়ের ধাক্কায় বাচ্চাগুলো একবার বালুচরে ওঠে, পরক্ষণে আবার পানিতে নেমে পড়ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে যেন সবগুলো বাচ্চা উত্তাল সাগরে মিলিয়ে গেল।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে কচ্ছপের বাচ্চাগুলো সমুদ্রে অবমুক্ত করেন কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের শিলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শাফিউল ইসলাম, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (কোডেক) কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র দাস, অসীম বড়ুয়া প্রমুখ।
সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জেলে সম্প্রদায়সহ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ কর্মসূচির পাশাপাশি বালুচরে হ্যাচারিতে কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণের মাধ্যমে কচ্ছপের বাচ্চা ফোটানোর কাজ করছে কোডেক। সম্প্রতি দুটি কচ্ছপ বালুচরে প্রায় ৪০০টি ডিম পাড়ে। এসব ডিম দুটি হ্যাচারিতে সংরক্ষণ (বালুর নিচে গর্ত খুঁড়ে) করা হয়। দুইদিন আগে গর্তের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে ৩৫০টি কচ্ছপের বাচ্চা। এসব বাচ্চা আজ বুধবার উত্তাল সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়েছে।
কোডেক কর্মকর্তা অসীম বড়ুয়া বলেন, এর আগে দুটি হ্যাচারিতে পাওয়া ১ হাজার ১৮১টি বাচ্চা সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়েছিল।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হক বলেন, গভীর সমুদ্র থেকে ডিম পাড়তে মা কচ্ছপ সৈকতের নির্জন এলাকায় ছুটে আসে। ডিম পাড়তে আসার সময় সাগরের মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে অনেক মা মারা যায়। আবার সৈকতে ডিম পাড়ার সময় বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণের শিকার হয় মা কচ্ছপ। বালুচর থেকে ডিমও খেয়ে ফেলে কুকুর। সরকার সামুদ্রিক কচ্ছপের সুরক্ষায় নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণের মাধ্যমে বাচ্চা ফুটিয়ে সমুদ্রে অবমুক্তকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
Leave a Reply