মোঃ সোহেল রানা জেলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার অন্তর্গত পাঁচুপুর ইউনিয়নের জগদাস গ্রামে। জানা গেছে, নিহত হাতেম আলী (১৮) মোঃ মনিরুল ইসলামের ছোট ছেলে। বিদেশ ফেরত মনিরুল পেশায় একজন ভ্যান মেকানিক। আব্দুল হাকিম (২২) ও নিহত হাতেম আলী মনিরুল এর প্রথম পক্ষের সন্তান। কয়েক বছর আগে প্রথম স্ত্রী হালিমা বেগম এর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি রোজিনা নামে একজনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং এখানে ও চার বছরের এক ছেলে রয়েছে। প্রতিবেশীরা জানায়, রোজিনা কে বিয়ে করার পর থেকেই মনিরুলের সংসারে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। রোজিনা, সতীনের দুই ছেলেকে দেখতে পারত না এমনকি খাবারও দিত না। বড় ছেলে হাকিম বাড়ি থেকে চলে গেলেও নিহত হাতেম আলী বাবা ও সৎ মায়ের সাথেই থাকতো।
প্রতিবেশী সুমি (২৪) বলেন, মনিরুলের সংসারে সারাক্ষণ অশান্তি লেগেই থাকে, চারদিন হল হাতেম আলী কে সৎ মা রোজিনা কোন খাবার দেয়নি। এটা নিয়ে প্রতিবেশী কয়েকজন ও ইউ পি সদস্য মনিরুলের আপন খালাতো ভাই মোঃ গোলাম হোসেন গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মনিরুলের বাড়িতে ঝামেলা মেটানোর জন্য যান। কিন্তু মনিরুলের স্ত্রী রোজিনা বেগমের অকথ্য অশালীন গালিগালাজ এর কারণে সবাই সমস্যার সমাধান না করেই ফেরত যান। কবির(২৩) নামক এক যুবক বলেন, নিহত হাতেম আলী তার সাথে সব সময় থাকতো সে আত্মহত্যা করার মত ছেলেই না। সে খুবই ভালো ছিল। “গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ০৯ টায় হঠাৎ করেই জানতে পারি হাতেম আত্মহত্যা করেছে।
সঙ্গে সঙ্গে হাতেম এর বাড়িতে গিয়ে সিঁড়ির উপরের চালে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। এবং হাতেম এর সৎ মা রোজিনা তখন তার ঘরে সিটকানি লাগিয়ে ছিল বাবা মনিরুল বারান্দায় বসে ছিল। তাদের আচরণ সন্দেহজনক ছিল”। কবির, সাগর, রিমন, মানিক, রাকিব, রবিন সহ প্রতিবেশীদের ধারণা হাতেম আলীকে মারার পর খুবই সরু রশি দিয়ে চালের সাথে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, রাত ১২টা নাগাদ ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন নিহত এর নানা ফজলুর রহমান (হাতি) কে মোবাইল ফোনে বলেন, পুলিশের কাছে যেন বলা হয় হাতেম আলী পেটের ব্যথায় মারা গেছে। তা না হলে সবাইকে ফাঁসিয়ে দেবো। ঘটনাস্থলে মোবাইল ফোন লাউড স্পিকার দেয়ার কারণে প্রতিবেশী সবাই গোলাম হোসেনের কথাটি শুনতে পায় এবং সাক্ষী দেয়। বিষয়টি নিয়ে ইউপি সদস্য মোঃ গোলাম হোসেনের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি এমন কিছু বলেননি বলে অস্বীকার করেন।
তার সাথে সাক্ষাতে কথা বলার এক পর্যায়ে স্বীকার করেন”আমি ফোনে বলেছিলাম যা হওয়ার হয়েছে এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করাই ভালো” আপনি জনপ্রতিনিধি হয়ে এমন কথা বলতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি। নিহত হাতেম আলীর বড় ভাই আব্দুল হাকিম বলেন আমার ভাইকে আমার বাবা ও সৎ মা মেরে ফেলেছে আমি তাদের বিচার চাই। রাত আনুমানিক ০১টায় এসআই মোঃ গোলাম মোস্তফা সঙ্গীয় ফোর্স সহ লাশটি আত্রাই থানায় নিয়ে আসেন এবং বাবা মনিরুল ইসলাম ও সৎ মা রোজিনা বেগমকে আটক করেন।শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লাশটি ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁয় পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এলাকাবাসীর দাবি, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।
Leave a Reply