সাভার প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী ইকবালের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদপত্রের এজেন্ট মো. নুরুল ইসলামের (মৃত) জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গত শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী পাথালিয়া ইউনিয়নের ইসলামনগর এলাকায় মো. নুরুল ইসলামের ৩০ শতাংশ জমি (বসতবাড়ী) দখলের চেষ্টা করেন মেহেদী ইকবাল। তিনি দখল কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পাথালিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা চিহ্নিত সন্ত্রাসী তৌহিদুল ইসলাম গংয়েরও সহযোগিতা নেন। এ সময় মেহেদী ইকবাল ও তৌহিদুল ইসলাম গংয়ের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা মো. নুরুল ইসলামের বসতবাড়ীর চারপাশের টিনের বেষ্টনি উচ্ছেদ করে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে তারা উচ্ছেদকৃত টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হল সংলগ্ন মাঠে ফেলে দেন।
এদিকে দখল কার্যক্রমে বাঁধা দিতে যাওয়ায় মৃত মো. নুরুল ইসলামের স্ত্রী ও তিন ছেলেকে মারধর করা হয়। এতে তারা গুরুতর আহত হয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনার আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর- ৫০৬) করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বরাবর অভিযোগপত্র দিতে গেলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওসমান গনি বলেন, ‘গভীর রাতে মেহেদী ইকবাল ও তৌহিদুল ইসলাম গং মৃত মো. নুরুল ইসলামের জমি দখলের চেষ্টা করেন। তাদের এমন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে আমরা জেনারেটর-কলাবাগানবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।’
মৃত মো. নুরুল ইসলামের বড় ছেলে মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৯৬ সালে হাজী সিরাজ উদ্দীনের কাছ থেকে আমার বাবা এই জমি ক্রয় করেন। ফলে আমরা দীর্ঘদিনযাবত সেখানে বসবাস করে আসছি। তবে ২০২১ সালে নিজের ওয়ারিশ দাবী করে বাংলাদেশ সার্ভের (বিএস) খতিয়ানের বিরুদ্ধে আপিল করেন মো. আব্দুস সোবহান। তার প্রেক্ষিতে সাভারের উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে একটি মামলা চলছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মামলা চলমান থাকার পরেও গত দুই সপ্তাহ ধরে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছিল। জমি দখল কার্যক্রমে মো. আব্দুস সোবহানকে মেহেদী ইকবাল ও তৌহিদুল ইসলাম সহযোগিতা করছেন। পাশাপাশি এই জমি নিজের বলে দাবী করেন মেহেদী ইকবাল। তাদের এমন কর্মকান্ডে আমি এবং আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেলিফোনে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী ইকবালের বিরু বলেন,আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমার একজন পরিচিত লোকের ফখরুলের সাথে জায়গা নিয়ে বিবাদ রয়েছে। সেটি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আমার রুমে বসে আলাপচারিত হয়েছে। হয়তো এখানে কোন ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিতে পাথালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবং ভূমিদস্যু মোঃ আব্দুস সোবহান একাধিকবার ফোন করেও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইমদাদুল হক বলেন জমি দখলের চেষ্টা ও হুমকি ধমকির অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে জমি সংক্রান্ত মালিকানার দাবির বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আদালতের শরণাপন্ন হলে ভালো হয়।
Leave a Reply