সাভার প্রতিনিধি :
সাভারে হিন্দু সম্প্রদায় কিংবা কোনো সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণ হলে কঠুর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেন সাভার থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও একাধিক বার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সাভার থানার বিরুলিয়া ইউনিয়নের মৈস্তাপাড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাভার থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা তার বক্তব্যে বলেন , তরুণদের তাজা রক্তের বিনিময়ে দ্বিতীয়বারের মতো আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা।
তরুণ শিক্ষার্থীদের এই আত্মত্যাগ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে মন্তব্য করে তিনি বলেন বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শহীদদের পরিবারের অন্তত একজনকে সরকারি চাকরি দেয়া হবে এবং নেয়া হবে শহীদ পরিবারের দায়িত্ব। তিনি বলেন এ দেশ আমার আপনার সবার। মুসলিম, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান আমাদের সবার পরিচয়, আমরা সবাই বাংলাদেশী। সুতরাং কারো প্রতি কোন রকম বৈষম্য মেনে নেয়া হবে না। যে বৈষম্য দূর করতে ছাত্ররা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দেশকে স্বাধীন করেছে, ফিরিয়ে দিয়েছে মানুষকে কথা বলার অধিকার, সেই বৈষম্য যেন এ দেশে আর কখনো ফিরে না আসে এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। এ সময় গোলাম মোস্তফা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন রকম কর্মকাণ্ডের প্রসংশা করে উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান সরকারকে তাদের কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য যে যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করার। বিএনপিতে অনেক দুষ্কৃতিকারীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন এসব দুষ্কৃতিকারী মুখোশধারীরা যাতে কোন অবস্থাতেই চাঁদাবাজিসহ কোনরকম অপকর্ম করে দলকে বিপদে ফেলতে না পারে সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। নিজের স্বার্থগুলোকে বিসর্জন দিয়ে হলেও দল ও দেশের তরে কাজ করার আহ্বান জানান বিএনপি নেতাকর্মীদের।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গোলাম মোস্তফা তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই দেশের উন্নয়ন চাইনি, তারা ব্যস্ত ছিল নিজেদের পকেট ভারি করতে। দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ, কেড়ে নিয়েছে মানুষের কথা বলার অধিকার সর্বোপরি দেশের অর্থনীতিও পুঙ্গ করেছে স্বার্থান্বেষী এই অগণতান্ত্রিক দলটি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বিরুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমির শিরালী তার বক্তব্যে বলেন, আর কোন বিভাজন নয়। সকল বিভেদ ও বিভাজন ভুলে গিয়ে দেশের স্বার্থে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মানুষ ধীরে ধীরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুফল পেতে শুরু করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে উল্লেখ করে তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে।
বিরুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন,এতদিন অনেক অন্যায় সহ্য করেছি,বিনা দোষে জেল খেটেছি আর কোন ছার নয়, এবার আঘাত আসলে প্রত্যাঘাত করা হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মিলিত হয়ে অন্যায়কে প্রতিহত করা হবে।
সাভার সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম মোল্লা বলেন,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আমরা নতুন পথের দিশা খুঁজে পেয়েছি । সুতরাং এ অর্জন ধরে রাখতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই।
সাভার থানা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেক বলেন, বিনা কারণে অনেক অন্যায় অত্যাচার সহ্য করেছি। দীর্ঘ ১৭টি বছর মুখ খুলে কথা বলতে পারেনি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমাদের কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। গোটা দেশ জাতি ছাত্রদের এ অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্বরণ করবে আজিবন। গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন হলে ভোটের মাঠে ব্যালটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সকল অন্যায় অত্যাচারের জবাব দিবে সাধারণ জনগণ।
সাভার থানা বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুল হামিদ বলেন,বিগত সরকার দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করেছে। সাধারণ মানুষের কথা বলার অধিকার এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনকে করে তুলেছিল ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকটা ডাইনোসরের ভূমিকায় পতিত হয়েছিল বিগত সরকার। দীর্ঘ ১৭ বছর পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি নতুন ভাবে কথা বলার অধিকার। সুতরাং আর কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় নয় বরং যেখানে অন্যায় হবে সেখানেই হবে প্রতিবাদ। বক্তব্যে তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের আসছে নির্বাচনে চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল সহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply