মোঃ সোহেল রানা, জেলা (নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ২ নং ভোপাড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত সদুপুর গ্রামে অবস্থিত পাল কসমেটিকস এর স্বত্বাধিকারী শয়ন পাল কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই দীর্ঘদিন যাবত উৎপাদন করে আসছেন ভেজাল প্রসাধনী সামগ্রী। তথ্য অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, খুবই অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে প্রশাসনের নিয়ম নীতি উপেক্ষা করেই কয়েকজন মহিলা কর্মচারী দিয়ে তিনি নিজেই ফর্মুলেশন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী সামগ্রী তৈরি করছেন। সেখানে নেই কোন রেজিস্টার্ড কেমিস্ট, নেই কোন নিরাপত্তা সনদ কিংবা প্রশাসনিক অনুমতি। বিষয়টি নিয়ে শয়ন পাল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন কোন সমস্যা নেই তার নাকি কেউ কিছু করতে পারবে না। ভোক্তাঅধিকার অফিসের সাথে তার ভালো যোগাযোগ আছে। তিনি ১৫ টির ও অধিক পণ্য উৎপাদন করেন কিন্তু বিএসটিআই কর্তৃক অনুমোদন দেখা গেছে ০৪ থেকে ০৫টি পণ্যের। কারখানাটিতে তিনজন মহিলা কর্মচারী দেখা গেছে, তাদের কারোরই মুখে নেই মাস্ক, হাতে নেই গ্লাভস। কেমিস্ট আছে কিনা জানতে চাইলে শয়ন পাল হাফিজুর রহমান নামের একজনের জীবন বৃত্তান্তের কাগজ দেখায়। সেখানে দেখা গেছে তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে আলিম এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স পাস করেছেন। কথিত কেমিস্ট হাফিজুর রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তিনি এখনো ছাত্র, এবং কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, তিনি শুধু পণ্যের ph এর পরিমাপ করেন। পণ্যের উপাদান গুলো নিয়ে কে কাজ করে তিনি বলতে পারেননি। ল্যাব এর মান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা কোন ল্যাব হতে পারে না এটা একটা গোডাউন। তিনি আরো বলেন পাল কসমেটিকস সম্পর্কে তিনি আগে থেকে কিছুই জানতেন না। তিনি জানান, পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছুর সাথে তিনি থাকতে চান না। বিষয়টি আত্রাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিনথিয়া হোসেন কে অবগত করলে তিনি বলেন , অনুমোদনহীন এসব কারখানা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তিনি আরো জানান, সাবেক সহকারি কমিশনার (ভূমি) অঞ্জন কুমার পাল কসমেটিকস এ কয়েক মাস আগে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেন এবং কারখানাটি বন্ধ করতে বলেন। সিনথিয়া হোসেন বলেন, বারংবার নির্দেশ দেয়ার পরেও শয়ন পাল কারো নির্দেশের তোয়াক্কা না করে কার্যক্রম অবৈধভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি পরামর্শ দেন, বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার, বিএসটিআই ও পরিবেশ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করার জন্য। সচেতন মহলের দাবি, তিনতলা আবাসিক ভবনের নিচতলায় অনুমোদন বিহীন কেমিক্যাল ব্যবহার করে শয়ন পাল এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাদের দাবি লাগামহীন শয়ন পাল এর লাগাম যদি প্রশাসন না টানতে পারে তাহলে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হতেই থাকবে আর দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়তে থাকবে। প্রশাসনিকভাবে পাল কসমেটিকস বন্ধ করে স্বত্বাধিকারী শয়ন পাল কে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।
Leave a Reply