মোঃ সোহেল রানা,জেলা(নওগাঁ)প্রতিনিধি: নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার পাঁচুপুর উজানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুয়ারা বেগম এর দুর্নীতির পাহাড়। তথ্য অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, মঞ্জুয়ারা বেগম ২৪ বছর ধরে উক্ত বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। চাকরিতে যোগদানের প্রথম থেকেই তিনি আর্থিক অনিয়মসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন।
অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের কোন চোখে পড়ার মতো উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেন নাই।সেই সাথে বিদ্যালয়টিতে নিজের পছন্দমত আত্মীয়- স্বজনের মধ্যে থেকে সভাপতি নির্বাচিত করে আসছেন বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভ।সাবেক সভাপতি মোঃ শামসুল ইসলাম প্রধান শিক্ষকের আত্মীয় হন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন; কিভাবে একজন ১০ বছর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন? বর্তমান যিনি উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মোঃ আবুল কালাম তিনি ও প্রধান শিক্ষক মঞ্জুয়ারা বেগমের বোনজামাই।তবে মোঃ আবুল কালাম শুধু নাম মাত্রই সভাপতি। বিদ্যালয় সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কালাম বলেন,আমার অজান্তেই প্রধান শিক্ষক মঞ্জুয়ারা বেগম আমাকে সভাপতি করেছেন আর প্রথম থেকেই মঞ্জুয়ারা বেগম আমার মতের বিরুদ্ধে কথা বলেন। আমার সাথে বনিবনা না হওয়ায় আমি তিন বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে যাই না।কোন মিটিংয়ে প্রধান শিক্ষক আমাকে ডাকেন ও না। সভাপতি কে প্রশ্ন করা হলে, তাহলে মিটিং এর রেজুলেশনে আপনার স্বাক্ষর কিভাবে হয়?
সভাপতি আবুল কালাম বলেন, আমাকে না জানিয়েই প্রধান শিক্ষক আমার স্বাক্ষর জাল করে রেজুলেশন করে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এবং ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,কোন মিটিংয়ে আমাকে প্রধান শিক্ষক কোনদিন ও জানাননি। ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও একই অভিযোগ করেন তার (প্রধান শিক্ষক) বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীরা সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক তাদের টয়লেট ব্যবহার করতে দেন না।
অভিভাবক বৃন্দ ও সচেতন গ্রামবাসীদের দাবি এই দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি তৈরি করে সরকারি অনুদান আত্মসাৎ করে আসছে। শুধু তাই নয়,গত ২২ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম থাকলেও প্রধান শিক্ষক নিজের ভাই মোঃ মোতাহার হোসেনকে সভাপতি করে একটি আবেদন উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে জমা দেন।
প্রধান শিক্ষক এর ভাই মোঃ মোতাহার হোসেন রাজশাহীতে বসবাস করেন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক রাজশাহীতে কর্মরত আছেন।উপরোক্ত বিষয় গুলো নিয়ে প্রধান শিক্ষক মঞ্জুয়ারা বেগমকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি কোন সদুত্তর উত্তর দিতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে সরকারি শিক্ষা অফিসার মোঃ তারিকুল ইসলাম কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করবো যদি প্রধান শিক্ষক দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব।
এলাকাবাসীর দাবি এই দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক সরকারি অনুদানের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন এজন্য তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।
Leave a Reply