সাভার প্রতিনিধি :
সাভারের আশুলিয়ায় স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় স্বামী ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল বৃহস্পতিবার র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাব-৪ ও র্যাব-১৩ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে রংপুরের পীরগাছা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।
আজ শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।
গ্রেফতার মো. ফারুক হোসেন গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার স্ত্রী নিহত শিমু আক্তার একই এলাকার বাসিন্দা। তারা দুই সপ্তাহ আগে আশুলিয়ার গাজিরচট নয়াপাড়া এলাকায় এসে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। তাঁরা দুজনেই আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার আগামী অ্যাপারেলস লিমিটেড পোশাক কারখানায় কাজ শুরু করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী শিমু পরকীয়ায় জড়িয়ে পরেছেন এমন সন্দেহ করতেন স্বামী ফারুক হোসেন। এনিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হতো। গত সোমবার দিবাগত রাতে একই বিষয় নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সবজি কাটার ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে হত্যা করা হয় শিমুকে। আঘাতে শিমুর গলা প্রায় দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। হত্যার পর শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায় ফারুক। এ ঘটনায় পরদিন মঙ্গলবার নিহতের বড় বোন আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে র্যাব আসামিকে আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে বৃহস্পতিবার র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাব-৪ ও র্যাব-১৩ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে রংপুরের পীরগাছা থেকে ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব আরও জানায়, ১০-১৫ দিন আগে তাদের গ্রামের বাড়িতে শিমুর সঙ্গে স্বামী ফারুকের বাকবিতন্ডা হয়। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মিমাংসা করা হয়। গত সোমবার রাতে শিমুর বড় বোন লাবনীর বাসায় রাতের খাবার খেয়ে নিজেদের ফ্লাটে চলে যান শিমু দম্পতি। পরদিন সকালে শিমুর বড় বোন লাবনী কর্মস্থলে যাওয়া পথে শিমুর ফ্লাটের দড়জা বাইরে থেকে আটকানো দেখতে পান। পরে তিনি দড়জা খোলে ভেতরে গিয়ে শিমুর রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে আশুলিয়া থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।
র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খান বলেন, আসামি ফারুককে গতকাল রাতে রংপুরের পীরগাছা থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শিমু পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরেছেন এমন সন্দেহ থেকেই ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে হাতের কাছে থাকা সবজি কাটার ছুড়ি দিয়ে শিমুর গলায় ছুরিকাঘাত করে প্রায় দ্বি-খন্ডিত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। আসামিকে থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে৷
Leave a Reply