সাভার প্রতিনিধিঃ
সাভারের আমিনবাজারে ব্যাবসায়ীক দ্বন্দের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে সাজানো মানববন্ধনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামী যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী রাজু আহমেদ শ্যামলের বিরুদ্ধে। তবে উপস্থিত গ্রামবাসী প্রতারক শ্যামলের চক্রান্তের বিষয়টি বুঝতে পেরে মানববন্ধন কর্মসূচী বর্জন করে চলে যান। বৃহস্পতিবার দুপুরে আমিনবাজার ইউনিয়নের বড়দেশী ঈদগাহ মাঠে আমিনবাজার ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগনের আয়োজনে উল্লেখ করে এ মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করেছিলেন একাধিক মামলার আসামী রাজু আহমেদ শ্যামল।
জানা যায়, এলাকার সাধারন মুসুল্লীদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঈদগাহ মাঠে কাজে বাঁধার কথা বলে মানববন্ধন কর্মসূচীতে ডাকা হয়। কিন্তু সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে জানা যায় রাজু আহমেদ শ্যামল তার নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য গ্রামবাসীদের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার চক্রান্ত করেছেন।
অভিযুক্ত রাজু আহমেদ শ্যামল সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী বৈশারটেক মহল্লার আজাহার উদ্দিনের ছেলে। তিনি নিজেকে আমিনবাজার ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে মিথ্যা পরিচয় প্রদান করে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমিনবাজার ইউনিয়নের বড়দেশী গ্রামের মোঃ আব্দুল হাকিমের ছেলে মোঃ ফয়জুর রহমানের ব্যাবসায়ীক পার্টনার ছিলেন রাজু আহমেদ শ্যামল। এসময় আমিনবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন (ঘাট পয়েন্ট) ও হাট-বাজারসহ বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের মূলধন প্রদানকারী মোঃ ফয়জুর রহমানের প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন শ্যামল। একপর্যায়ে টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়টি বুঝতে পেরে নিজের পাওয়ান টাকা দাবি করায় ব্যবসায়ী ফয়জুর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করে হয়রানি করতে থাকেন প্রতারক ও অর্থ আত্মসাৎকারী মামলাবাজ রাজু আহমেদ শ্যামল। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামবাসীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতসহ ভূল বুঝিয়ে ঈদগাহ মাঠের উন্নয়ন কাজে বাঁধা প্রদানের মিথ্যা অভিযোগ তুলে মারধর, ভাংচুর ও চুরির মামালার বাদী ব্যবসায়ী মোঃ ফয়জুর রহমানের ছবি ব্যবহার করে সাজানো মানববন্ধনের চেষ্টাও করেন তিনি। কিন্তু সাধারন মানুষ মামলা থেকে বাঁচার জন্য এই সাজানো মানবন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে বুঝতে পেরে মানববন্ধন কর্মসূচী প্রত্যাহার করে চলে যায়।
মামলার বাদি মোঃ ফয়জুর রহমান জানান, আমিনবাজারের বড়দেশী বৈশারটেক মহল্লার আজাহার উদ্দিনের ছেলে মোঃ রাজু আহমেদ শ্যামল (৪৫), মোঃ সুমন (৩৫), তাদের ভগ্নিপতি মোঃ টুটুল (৩৫), ফুপা মোঃ আলমগীর হোসেন ওরফে জামাল (৪৫), কর্মচারী মোঃ মনজু (৪৫) ও সাইদসহ (৪৫) অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন মিলে আমার বাড়ির কাজে বাঁধা প্রদান, নির্মান সামগ্রী চুরিসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পায়তারা করে আসছে। তারা আমাকে ও আমার লোকজনকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। এসব ঘটনায় আমি সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে সেই মামলাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য মিথ্যা মানববন্ধনের আয়োজন করে রাজু আহমেদ শ্যামল। সে সাধারন মুসুল্লীদের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে আমার বিরুদ্ধে ঈদগাঁহ মাঠের উন্নয়ন কাজে বাঁধা প্রদানের মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন মানববন্ধনের আয়োজন করে। কিন্তু সাধারন মানুষ বিষয়টি বুঝতে মানববন্ধন কর্মসূচী প্রত্যাহার করে চলে যায়।
ফয়জুর রহমান আরও জানান, হামলাকারীরা সঙ্গবদ্ধ চিটার ও বাটপার। তাহাদের বিকেদ্ধে একাধিক মামলা ও জিডি আছে। তারা আমাকে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর পাশাপাশি আরও মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি জানিয়ে আমি থানায় সাধারন ডায়েরী করেছি। এছাড়া হামলাকারীরা আমার জমির উপর দিয়া বিভিন্ন সময় ভেকু ও ট্রাক ভর্তি মালামাল নিয়া আমার ও আমার প্রতিবেশীদের জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়। রাজু আহমেদ শ্যামলের নেতৃত্বে একটি পেলুটার গাড়ী নিয়া আমার জমির বাউন্ডারী ভাংচুর করে আমার জমিতে প্রবেশ করে। আমি নিষেধ করলেও তারা আমার কথা শুনেনা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাজু আহমেদ শ্যামলের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
সাভার মডেল থানার আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হারুন-অর-রশিদ বলেন, ব্যাবসায়ী ফয়জুর রহমানকে মারধর, চুরি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এঘটনায় আসামীদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply