হুমায়ুন কবির,সাভার:
দূর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা—গড়বে আগামীর শুদ্ধতা—এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সাভারে অনুষ্ঠিত হলো দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
সোমবার সকালে সাভার উপজেলা মিলনায়তনে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) এর যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব শওকত আলী মাহমুদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহিরুল আলম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা জেলা-২ দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান ও সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.সালাউদ্দিন খান নঈম।
অনুষ্ঠান শেষে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহিরুল আলম ও অতিথিবৃন্দ।
ফাইনাল বিতর্কে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন সাংবাদিক ও বিতার্কিক জাফর ইকবাল, বিতার্কিক ফাহিম শাকিল ও বিতার্কিক সাদাত ইবনে ইসলাম।
ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে সাভার ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও রানার্সআপ হয় সাভার ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
অনুষ্ঠানে বিতর্ক প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারক সাংবাদিক ও বিতার্কিক জাফর ইকবাল বলেন, “দুদক এখনও সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। যদি স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়, তবে দেশকে অনেকাংশে দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব।”
জাফর ইকবাল আরো বলেন,আমাদের দেশে দুর্নীতি ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে গেছে। আমাদের দেশ থেকে দুর্নীতি সম্পূর্ণরূপে দূর করতে রাষ্ট্র অনেক ক্ষেত্রে আন্তরিক, আবার কিছু ক্ষেত্রে আন্তরিকতার প্রমান রাখতে ব্যর্থ হয়। কারন রাষ্ট্রের পুরোপুরি সদিচ্ছা ছাড়া কখনোই কোন অবস্থাতেই দেশ থেকে পুরোপুরি দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয়। দুর্নীতি স্বমূলে নির্মূল না হওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায় রাষ্ট্রের আন্তরিকতা এবং সদিচ্ছার অভাবকে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহুরুল আলম বলেন,দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে সামগ্রিকভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক স্তরে একযোগে কাজ করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন এবং তা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা জরুরি। দুর্নীতিবাজদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন করতে হবে যেন সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যম তথ্য পেতে পারে।
দুদককে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত রেখে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
শিশুদের ছোটবেলা থেকেই নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। দুর্নীতি যে সামাজিক ব্যাধি তা বোঝাতে হবে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে। রাজনীতিতে স্বচ্ছতা ও সদিচ্ছা আনতে হবে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোনো অবস্থাতেই যেন অভিযুক্তরা রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে না পারে।
সাধারণ মানুষকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতন ও সোচ্চার করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই পরিবর্তন সম্ভব নয়।
Leave a Reply